জাদু-টুনা কী ইসলামে হালাল?

প্রথমেই বলে নিই,রুকিয়া নিয়ে যে যেখানেই যতটুকু কাজ করুক না কেন আমি সবাইকে এপ্রিসিয়েট করি। সবার জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করি এবং তাদেরকে আল্লাহর জন্যই ভালোবাসি। কারন আমি জাদুটোনার ভয়ংকর দিকগুলো জানার আগে কখনো কল্পনাও করিনি এই জগতটা কতটা ভয়ংকর এবং মারাত্তক। এটা কতটা মারাত্তক সেটা বুঝতে শুধু দুইটা স্টেটমেন্ট যথেষ্টঃ
১. জাদুটোনা নাওয়াকিদুল ইসলামের একটি,অর্থাৎ ইমান নষ্টকারী বিষয়গুলোর একটি। জাদুর সাথে জড়িয়ে গেলে তা আপনাকে মুর্তাদ বানিয়ে ছাড়বে।

২. ইসলামি শরিয়তে জাদুকরের শাস্তি মৃত্যুদণ্ড।
যখন অনলাইনে জিন/জাদু নিয়ে দাওয়াতি কাজ শুরু করলাম,প্রচুর মানুষ যোগাযোগ করতে শুরু করলো। আমি নিজেকে বিশ্বাস করতে পারছিলামনা এই সমস্যার ব্যাপকতা দেখে।  আগে ভাবতাম কেবল গ্রামের কিছুসংখ্যক মানুষ এসবে জড়িতো। কিন্তু বাস্তব অভিজ্ঞতায় দেখলাম শিক্ষিত অশিক্ষিত গ্রাম শহর কোন শ্রেনী বাদ নেই।  কতশত মানুষ নিজের অজান্তেই ইমানহারা হয়ে যাচ্ছে। আর এর বিপরিতে একমাত্র রাকিরাই যুদ্ধ করে যাচ্ছে এই কুফোরির বিরুদ্ধে। আমি জানি কোন রাকিই পারফেক্ট না। ভুলত্রুটি কমবেশি সবার মধ্যেই থাকতে পারে। তবে মোটা দাগে এটুকু নিশ্চিত, একজন খারাপ রাকি প্রচলিত জাদুকর /কবিরাজের থেকেও হাজার গুন ভালো। কারন একজন জাদুকর কাফের,তার চিকিৎসা পদ্ধতি হারাম। অন্যদিকে রাকি মুমিন, সে কোরআনের চিকিৎসা পদ্ধতি অনুসরন করে যদিওবা ছোটখাটো ভুল থাকতে পারে যা তাকে জাদুকরের মত কাফের বানিয়ে দেয়না।
.
কিন্তু খুবই কষ্ট পাই যখন রাকিদের মধ্যে কাদা ছোড়াছুঁড়ি দেখি। আমি অনলাইনে জিন/জাদু নিয়ে দাওয়াতি কাজ শুরু করার আগে কোন রাকির সাথে কখনই যোগাযোগ হয়নি। এরপর একে একে বাংলাদেশের নামকরা সব রাকিদের সাথে পরিচিত হবার সৌভাগ্য হয়েছে আলহামদুলিল্লাহ।  যত তাদের সাথে গভীরভাবে সম্পর্ক হতে থাকলো,তত তাদের ব্যাপারে হতাশ হতে থাকলাম। আমার ধারনা ছিল রাকিরা United হবেন। কিন্ত দেখলাম সম্পুর্ন বিপরিত। তাদের মধ্যে প্রচুর হিংসা বিদ্বেষ। মতপার্থক্য থাকতেই পারে,কিন্তু এতটা মারাত্তক বিদ্বেষ আমি আশা করিনি। তার থেকেও ভয়ংকর দিক হচ্ছে তারা এসব করছেন প্রকাশ্যে,সবাইকে জানিয়ে। একজন আরেকজনকে জনসম্মুখে অপমানিত অপদস্থ করার প্রতিযোগিতায় নেমেছে। মাঝ থেকে সাধারণ মানুষের মন থেকেই তারা তাদের জায়গাটা হারিয়ে ফেলছে।

আমি সব রাকিদের সাথে সুসম্পর্ক রাখার চেষ্টা করতাম সবার থেকেই কিছু শেখার জন্য। তাদের খারাপ দিকগুলো স্কিপ করে ভালোগুলো গ্রহন করতাম। এমনকি আমি নিজেও একবার এক রাকির দ্বারা তুচ্ছতাচ্ছিল্যতার শিকার হয়েছি। কিন্তু এসব নিয়ে কখনো অনলাইনে বা জনসম্মুখে বলিনি। শুধু তাই নয়, রাকিদের কাদা ছোড়াছুঁড়ি দেখে আমি রুকিয়া নিয়ে ফেসবুকে লেখালেখিও বন্ধ করেছি এই ভয়ে যে নাজানি আমাকে নিয়ে আবার কি কাদামাখা শুরু হয়ে যায়!

রাকি ভাইদের কাছে তাই আমার একটাই অনুরোধ, আপনারা নিজেদের মধ্যে বন্ধন তৈরি করতে না পারলেও অন্তত publicly নিজেরা নিজেকে উলংগ করবেন না। আপনারা ভুলে যাবেন না যে, শয়তান আমাদের প্রকাশ্য শত্রু।  আপনারা সেই শয়তানের বিরুদ্ধে সরাসরি যুদ্ধে লিপ্ত। আপনারাই যদি হেরে যান,সাধারণ মানুষ আরও অনেক বেশি আপনাদের কারনে পথভ্রষ্ট হবে। আপনাদের পরাজয় দেখে তারা হাল ছেড়ে দিলে আল্লাহর কাছে অবশ্যই আপনারা জিজ্ঞাসিত হবেন। এজন্য কেবল আল্লাহকে ভয় করে হলেও নিজেদের সমস্যা নিজেরা ফিক্স করুন। দয়া করে প্রকাশ্যে এসব মুর্খতাপুর্ন কাজ বন্ধ করুন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *