সততাই জীবনের মূলমন্ত্র!

এক পোস্টে এই কাহিনী পড়ে হাসলাম অনেক্ষণ।

বেচারার বুদ্ধির প্রশংসা করতেই হয়। তিনি বিয়ে করবেন। পাত্রী ঠিক, বিয়ের দিন তারিখ সব ঠিক। হঠাৎ তার মনে হয়েছে, পাত্রী ও তার বাবা মা কেমন মন-মানসিকতার এবং সততার পরীক্ষা নিলে কেমন হয়। যাকে নিয়ে জীবন কাটাবে তার চিন্তা চেতনা আসলেই একটু বাজিয়ে নেয়া উচিৎ।

তিনি পাত্রী এবং তার বাবা মায়ের (হবু শশুর শাশুরি) কাছে ৫০০/৬০০ টাকার মোবাইল ফ্লেক্সিলোড করে পাঠিয়ে এক মোবাইলের দোকানে গিয়ে এক এক করে তিনজনের কাছেই বলেছেন, তাদের কাছে ভুল করে এই টাকা গিয়েছে, টাকাগুলো যেন এই নাম্বারে ফেরত দেয়া হয়। পাত্র বেচারা হতবাক হয়ে গেলেন। তারা তিনজনেই টাকা ফেরত দেয়া তো দূরের কথা, টাকা প্রাপ্তি স্বীকারই করেননি।

সমস্যা এখানেই শেষ হলে তো মিটেই যেত।

এই পরীক্ষা নিতে গিয়ে পাত্র চরম বিপদে পড়েছে্ন। পাত্রী দেখে তার এত পছন্দ হয়েছিল যে, এখন সে না পারছে বিয়ে ভেঙ্গে দিতে, না পারছে বিয়ে করতে।

জানি না, এরকম পরীক্ষা নিলে আমরা আসলে ক’জন পাশ করতে পারব। যদিও সততা নাকি অনেক সময় অর্থের পরিমাণের উপর নির্ভর করে। অর্থাৎ আপনি কত টাকা পর্যন্ত সৎ থাকতে পারবেন। অবশ্য জগতে এমন অনেকেই আছেন, যারা সসীম মাত্রা পর্যন্ত অনায়াসেই সততার মাত্রা ধরে রাখতে পারবেন। তাঁদের কোনোদিন কেনা যাবে না।

আমরা কিন্তু অনেকেই বুঝি না বা বুঝেও না বুঝার ভান করে থাকি।

আমাদের জীবন যাত্রা কেমন, আয়ের সঙ্গে ব্যয়ের অসঙ্গতি কতটুকু। আমরা বেতন বা আয় কেমন, তার তুলনায় খরচ কত বেশি করছি, বাকি টাকা আসছে কোথা থেকে……. আমাদের বাচ্চারা কিন্তু ঠিকই জানে বা বুঝতে পারে। আর যখন বুঝতে পারল, তখন সব শেষ। বিরাট কিছু বানাতে পারবেন তাকে, কিন্তু ভাল মানুষ বানাতে পারবেন না কোনোদিন। সেই পাত্রীর ঘটনা যদি সত্য হয় তবে জানি না ঐ বাসায় কি পরিবেশ বিরাজ করছে বা কতটা ভয়াবহ পরিবেশে পাত্রী বড় হয়েছে।

আল্লাহপাক ক্ষমা করুন আমাদের।

আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মই হবে এদেশের কাণ্ডারি। প্লিজ মানবিক ধ্বংস ডেকে আনবেন না এদের জীবনে। আজ আবার একটি বিষয় রিপিট করছি। কয়েকদিন আগে এক পোস্টে সন্তানদের উপর বাবা মায়ের অভিশাপ সম্পর্কে লিখেছিলাম। আমি হতবাক হয়েছি, মানে কল্পনাও করতে পারিনি এতজন কমেন্ট এবং ইনবক্সে বাবা মায়ের অভিশাপ নিয়ে তাঁদের করুণ কাহিনী জানাবে। কোনো কারণ ছাড়াই উঠতে বসতে পিতা মাতার অভিশাপ নিয়ে জীবন যাপন করছে, তাঁদের সংখ্যা এত বেশি হবে তা কল্পনা করা সত্যিই সম্ভব নয়। তাঁদের মতে, এরা সবাই ভয়ানক মানসিক যন্ত্রণার ভিতর দিন কাটাচ্ছেন এবং ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে তাঁদের নিয়ে গেছে পিতা মাতার অভিশাপ।

আফসোস!! বড়ই আফসোস! দুর্ভাগ্য এই সন্তানদের।

আমরা এ কেমন বাবা মা হলাম!! বাচ্চারা আল্লাহর শ্রেষ্ঠ নেয়ামত। এই কি তার নমুনা!! ভাবতেও পারি না, বিনা কারণে কথায় কথায় মা-বাবা অভিশাপ দিতে পারে্ন তার সন্তানকে। আমি আমার জীবনে দুইজনকে পেয়েছি অনবরত বাপের অভিশাপ পাওয়া। মা এই পথে গিয়েছেন, তা কখনো পাইনি। এই দুইজনেই আমার আত্মীয়। কিন্তু আরো এত আছে, তা ভাবিনি কখনো।

প্লিজ, অন্ধকার জগতের দিকে ঠেলে দেবেন না আপনাদের আদরের সন্তানকে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *