পানিতে বেশিখন হাত চুবিয়ে রাখলে কুঁচকে যায় কেন?
আসসালামু আলাইকুম সবাই কেমন আছেন?
আশা করি সবাই ভালো আছেন! তো আজ আপনাদের জন্য একটু গুরুত্বপূর্ণ টপিক নিয়ে আলোচনা করবো! সবাই একটু মনযোগ দিয়ে পড়বেন, এখানে প্রত্যেকটা কথাই খুব মূল্যবান। তো আজকের টপিক হচ্ছে
পানিতে বেশিখন হাত চুবিয়ে রাখলে কেন হাতের চামরা কুঁচকে যায়?
আমরা যদি বেশিখন পানিতে হাত চুবিয়ে রাখি তাহলে কেন আমাদের হাতের চামরা কুঁচকে যায়। আসলে কিন্তু চামড়াটা কুঁচকে যায় না। বরং ঘটে অন্য একটি কিছু! তখন আমাদের আন্দাজ হয় আঙুলের চামড়া কুঁচকে গিয়েছে। আসুন এবার এর কারন জেনে নেই- আমাদের দেহের চামড়া বেশ কয়টি স্তর দিয়ে তৈরি। আমাদের দেহের চামড়ার সর্বশেষ স্তরটির নাম এপিডারমিস। শরীরের এই এপিডারমিস স্তর থেকে একধরনের তৈলাক্ত পদার্থ নির্গত হয় যার নাম সেবাম। এই সেবামই আমাদের চামড়ার জন্য একটি প্রতিরক্ষা পর্দার মতো তৈরি করে রাখে।
আমরা যখন কাঁচ কিংবা অন্যান্য মসৃণ কোনো তল স্পর্শ করি তখন আমাদের হাতের ছাপ বসে যায় সেখানে,
আমাদের হাত পরিস্কার থাকলেও এটি হয়ে থাকে। এই তৈলাক্ত ছাপই সেবাম। সেবামের কারণেই এই কাজটি হয়ে থাকে। যখন আমরা কিছু সময় পানি ধরি বা পানির সংস্পর্শে থাকি তখন এই সেবামের কারণে পানি আমাদের চামড়ার ভেতরের স্তরে প্রবেশ করতে পারে না। কিন্তু বেশি সময় ধরে পানি ধরলে আমাদের হাতের এই সেবাম চলে যায় এবং চামড়ার ভিতরে পানি প্রবেশ করে। অর্থাৎ আমাদের চামড়া পানি শোষণ করে এবং এপিডারমিসের ভেতরের স্তর ডারমিসে প্রবেশ করে। তখন যেই স্থানগুলোতে ডারমিস ও এপিডারমিসের মধ্যকার বন্ধন থাকে না সেসব স্থান পানি শোষণ করে ফুলে যায় এবং যে যে স্থানগুলোতে ডারমিস ও এপিডারমিসের মধ্যকার বন্ধন থাকে সেসব স্থান আগের মতোই থাকে। তাই আমাদের কাছে চামড়া কুঁচকে গিয়েছে বলে মনে হয় বা দৃশ্যত আমরা তাই দেখি। আপনি হয়তো জেনে খুশি হবেন যে, কুঁচকে যাওয়া হাত ও পায়ের ত্বক আমাদের কিছুটা সুবিধাও দিয়ে থাকে।
যেমনঃ
পানিতে আমাদের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি। 2013 সালে বিখ্যাত nature ম্যাগাজিনে প্রকাশিত একটি গবেষণায় দেখা গেছে, কুঁচকে যাওয়া ত্বকের কোনো কিছু আঁকড়ে ধরে রাখার ক্ষমতা (grip) অকুঞ্চিত ত্বক থেকে ১২% বেশি। উক্ত গবেষণায় দেখা যায়, কুঞ্চিত হাতযুক্ত ব্যক্তিরা পানিতে রাখা মারবেলকে অকুঞ্চিত হাতযুক্ত ব্যক্তিদের থেকে দ্রুত সরিয়ে ফেলতে পারে।
অন্যদিকে পায়ের পাতার চামড়া কুঁচকে যাওয়ার সুবিধা হল, ভেজা রাস্তার উপর দিয়ে যেন আমরা সহজেই খালি পায়ে হেঁটে যেতে পারি, যেন পিছলে পড়ে না যাই। আবার হয়ত প্রশ্ন জাগতে পারে, হাত ও পায়ের তালুর চামড়া তবে সর্বদা কুঁচকে থাকে না কেন? এর কারণ হলো, এতে ত্বকের সংবেদনশীলতা (কোনো কিছু বোধ বা উপলব্ধি করার ক্ষমতা) কমে যায়। তাই কেবল প্রয়োজনের সময়ই (মানে পানির মধ্যে) হাত ও পায়ের তালুর চামড়া কুঁচকে যায়।